যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বিশ্ব পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশ্বায়নএকটি রচনাত্মক পরিবর্তন এনেছে। বর্তমান পৃথিবীতে একজন আর একজনের সঙ্গে পুরোপুরিযুক্ত, একে অন্যের উপর নির্ভরশীল। সেই জন্যে দুটো ভাষা জানা বা দ্বিভাষিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় ভাষাজ্ঞান ব্যবসাকে মানুষের সঙ্গে আরও যথার্থরূপে নিবিড়ভাবে সংযুক্ত করতে সব সময় সাহায্য করছে।
কর্ম জগতের বিশেষজ্ঞরা সবচেয়ে ভালো বিদেশী ভাষা শেখার ব্যাপারেসবসময় বিতর্ক করে থাকেন। তবে এ ব্যাপারে সকলে একমত হওয়া খুবই কঠিন। কিছু ভাষা আয়ত্ত্ব করা বেশ কঠিন, তাই তা মূল্যবান। সেই জন্যে অ-স্থানীয় সাবলীল বক্তার অভাব তাদের যোগ্য করে দেয়। কিছু কিছু ভাষা অসংখ্য মানুষ বলেন বলে তা গুরুত্বপূর্ণ, আবার কিছু ভাষা সমৃদ্ধশীল শিল্পের সঙ্গে সংযুক্ত বলেও গুরুত্বপূর্ণ।
বিদেশী ভাষাশেখারসুযোগ-সুবিধার ব্যাপারে আমরা সবাই ভুল বুঝি। চাকরীর ক্ষেত্রে বিদেশী ভাষার গুরুত্ব সম্পর্কে আমাদের নানান ভুল ধারণা আছে। আমরা ভাবি, বিদেশী ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে পারলে শুধু অনুবাদ ও ভাষান্তরের কাজই পাওয়া যায়। তবে ইন্টারনেটের আবির্ভাবে ও দূর-দূরান্তে ব্যবসা করা সহজ হয়ে যাওয়ায় কর্মক্ষেত্রে বিরাট একটা পরিবর্তন এসেছে। এখনকার দিনে ভাষার উপর দক্ষতা অর্জন এক অনন্য সম্পদ। কিছু কিছু কাজের ক্ষেত্রে অতি সত্ত্বর তা অত্যাবশ্যক বলে গণ্য হতে পারে। ইন্টারনেট-নির্ভর বিশ্ব অর্থনীতিকে ধন্যবাদ--চাকরির ক্ষেত্রে এখন অনেকসুযোগ বেড়েছে, এবং এই সমস্ত কাজে কম্প্যুটারে প্রাথমিক জ্ঞান থাকাটা জরুরী।
বিদেশী ভাষা শিক্ষার প্রয়োজন দিন দিন বেড়েই চলেছে; আর দ্বিভাষিকতা, বাস্তব জগতে সম্ভবত সবচেয়ে বেশী প্রয়োজনীয় দক্ষতা যা চিরকালই থাকবে। পৃথিবী তোমার একটা ভাষা জানার দক্ষতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেয়ে এখন তোমার একটা বিদেশী ভাষা শিখে নেওয়ার সময় হয়েছে। মানব সম্পদ সংসাধন বিশেষজ্ঞদের নির্ভুল গবেষনা বিচার বিবেচনা করে আমরা কর্মক্ষেত্রের একটা তালিকা তৈরী করেছি। একটা বিদেশী ভাষা শিখে নিয়ে তোমরা নিজেরাই তা বিবেচনা করে দেখতে পার।
একটা অতিরিক্ত ভাষা জানা থাকলে আপনার পেশায় এক ব্যতিক্রমী পরিবর্তন আসতে পারে। কারণ বিশ্ব জুড়ে ব্যবসার প্রসার দ্বিভাষিক মানব সম্পদের এক বিরাট চাহিদা তৈরী করেছে। আন্তর্জাতিক ব্রান্ডগুলি তাদের উৎপাদন নোতুন একটা বাজারে ছাড়ার আগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার কৌশল নির্ধারণ করে। এখানেই প্রোডাক্ট লোকালাইজেসন্ ম্যানেজারের কাজ শুরু।
লোকালাইজেসন্ ম্যানেজারেরা ভাষা, সংস্কৃতি ও ক্ষেত্র অনুসারে একটি পণ্য বা পরিষেবারপরিবর্তন সাধন করেন। অনেকেই স্থানীয়করণের সঙ্গে অনুবাদকে গুলিয়ে ফেলেন, তবে অনুবাদ স্থানীয়করণেরই একটা অংশ। স্থানীয়করণকে আরও ভালো করে বোঝার জন্যে নেটফ্লিক্স, ফেসবুক, গুগল, আমাজন বা ইন্টারনেটে থাকা অন্য বড় বড় কোম্পানীর উদাহরণ নেওয়া যাক। তাদের পণ্যগুলি তাদের আকাঙ্ক্ষিত ভৌগলিক অঞ্চলের সঙ্গে সুসঙ্গত, কারণ তাদের লক্ষ্যের শ্রোতাদের মধ্যে বিশ্বাস অর্জন করার জন্যে তারা উৎপাদনকেও আঞ্চলিক রূপ দেয়। একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, শতকরা ৬০ ভাগ ইংরেজী না-বলা লোক কেবলমাত্র ইংরেজী ওয়েবসাইট থেকে কদাচিৎ কেনে বা কখনও কেনে না।
লিয়াজোঁ অফিসার
প্রতি বছর অধিকাধিক দেশ একে অন্যের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যের চুক্তি স্বাক্ষর করছে, এবং আশা করা হচ্ছে আগামী কয়েক বছর এই প্রক্রিয়ায় আরও বেশী গতি আসবে। কেবল বিশেষ মানব সম্পদের অভিজ্ঞরাই যোগাযোগ ত্বরাণ্বিত করতে পারেন কারণ বৃহৎ কর্পোরেশনের এই যৌথ কাজকর্ম সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত ভাবে ভিন্ন হতে পারে। লিয়াজোঁ অফিসারকে ভাষাগত দক্ষতায় সাবলীল হতে হবে কারণ তাঁরা তাঁদের নিজেদের প্রতিষ্ঠানের মুখচ্ছবি ও শক্তি। একজন লিয়াজোঁ অফিসারের ভূমিকা একজন অনুবাদক বা ভাষান্তরকারী অপেক্ষা অনেক বেশী, কারণ সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ায় লিয়াজোঁর সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রয়োজন হয়।
এই কাজের মধ্যে পড়ে তথ্য ভাগ করা ও প্রত্যাশিত কাজ সুনির্দিষ্ট করে তা ঠিকমত পরিচালনা করা। দু'টি ভিন্ন ভিন্ন দলকে একত্র করার এঁরা হলেন সেতুবন্ধ। লিয়াজোঁ অফিসারের পদে স্থানীয় লোক নি্যুক্ত হতে পারেন। এঁরা দু'টি পৃথক সত্তার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সাফল্যের সঙ্গে সহজ করে তুলতে পারেন। এই পদ অত্যন্ত গুরুত্ববপূর্ণ। কারণ যে কোন প্রতিষ্ঠানে এই পদের ভূমিকা খুবই সক্রিয়। আপনার যদি সমন্বয় শক্তি ও বাকশক্তি প্রখর হয় তাহলে নির্দ্বিধায় এই কাজে নেমে পড়ুন। কারণ আপনার বিদেশী ভাষার দক্ষতা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রকাশিত হবে যা আপনার অবস্থান নিঃসন্দেহে দীর্ঘায়ত করবে।
ফরেন সিভিল সার্ভিস অফিসার
বিদেশী ভাষায় দক্ষ লোকেদের সরকার হল অন্যতম বড় নিয়োগকর্তা। এই বিষয়টি ভাষা শিক্ষার্থীদের অনেকেই অবহেলা করেন। একটা কূটনৈতিক মিশনের অংশ হওয়াটা বেশ চিত্তাকর্ষক কারণ এতে প্রচূর ভ্রমণ করতে হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আপনি আপনার দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন। এই ধরণের কাজে বৈদেশিক বিষয়গুলি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক জড়িয়ে রয়েছে। একজন সরকারী কর্মচারী হিসাবে সৈন্য বিভাগ ছাড়াও আপনি বিদেশে সরকারী বিভাগে বা এজেন্সীতে কাজ করতে পারেন।
বিদেশী ভাষায় দক্ষ ব্যক্তিরাই এই কাজে মুখ্য প্রার্থী। কারণ আপনি বিদেশে নিযুক্ত হবেন এবং সম্ভবত এমন একটি দেশে যেখানে ইংরেজী প্রধান ভাষা নয়।
কূটনৈতিক মিশনের লোকেদের কাজ ভিন্ন ভিন্ন। বিদেশী সরকারী কর্মচারীদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ভাবে মানিয়ে চলার জন্যে, দর কষাকষির জন্যে বা বার্তালাপের সময় সাহায্য করার জন্যে অফিসারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বেশীর ভাগ বৈদেশিক মিশনের একটা বিভাগ থাকে যা পুরোপুরি মিশনের সাংস্কৃতিক বিভাগ দেখাশোনা করে। তাঁরাই এই মিশনের অংশ হওয়ার উপযুক্ত যাঁদের নোতুন দেশ ও সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেকে গড়ে নেওয়ার ধৈর্য আছে এবং যাঁরা বৈদেশিক সম্পর্ক স্থাপন করতে ও তা রক্ষা করতে তাঁদের সরকারকে সাহায্য করতে পারেন।
সাব টাইটেল বা ভয়েস-ওভার আর্টিষ্ট
যদি আপনি অন্য ভাষা ঠিকমত বলতে পারেন ও ভালোভাবে লিখতে পারেন তাহলে আপনি টিভি ও ফিল্ম ইন্ডাস্স্ট্রিতে সবচেয়ে বেশী যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। ভাষার উপর একটা ডিগ্রি থাকলে আপনি সাব-টাইটেল লিখতে পারেন বা যে কোন চলচ্চিত্র, ডকুমেন্ট্রি বা সিরিজে কণ্ঠ দিতে পারেন। অধিকাংশ চলচ্চিত্র বিশ্বের নানান দেশে তৈরী হলেও হলিউড ও বলিউডই এই শিল্পের প্রাণকেন্ন্দ্র। বিদেশে এই সব চলচ্চিত্র মুক্তি পেলে আন্তর্জাতিক স্তরে তা বুঝে ওঠার জন্যে সাব-টাইটেল বা ভয়েস ওভারের দরকার হয়। যাঁরা ভাবেন লিখিত ভাষায় তাঁদের ভালো শক্তি আছে ফিল্মে সাব-টাইটেল লেখার জন্যে তাঁদের পক্ষে এ এক অনন্য পেশা। কারণ আপনি কেবল আক্ষরিক অনুবাদই করেন না শিল্পীদের ভাবাবেগও ফুটিয়ে তোলেন। অপরপক্ষে কথ্য ভাষায় যাঁরা সাবলীল ও যাঁদের উচ্চারণ, উচ্চারণ ভঙ্গি ও ব্যাকরণ জ্ঞান স্পষ্ট সেই সব ব্যক্তিরা ভয়েস ওভারের জন্যে আদর্শ।
আমদানী/রপ্তানি বিশেষজ্ঞ
আমাদের চারদিকে আন্তর্জাতিক পণ্য জাহাজে স্থানান্তরিত করা হলেও এ ব্যাপারে আমরা একেবারেই অজ্ঞাত। অপরপক্ষে আমদানী ও রপ্তানি বিশেষজ্ঞের কাজ হল পন্য শুলক বিভাগের রীতিনীতি মেনে চলছে কিনা তা সুনিশ্চিত করা,ক্রেতাদের বীমাকরণে ও শুলক কম করায় সহায়তা করা ও জাহাজে পণ্য পাঠানোর কাজের প্রস্তুতি নেওয়া পরিচালনা করা। আমদানী/রপ্তানি কোম্পানী সারা বিশ্বে রয়েছে।ক্রেতাদের সঙ্গে এবং শুলক বিভাগের এজেন্টদের সঙ্গে আপনি প্রতিদিন স্থানীয় ভাষায় ও দ্বিতীয় ভাষায় যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন।
আন্তর্জাতিক বিমানে ফ্লাইট এট্যান্ডেন্ট
যাঁরা বিমানে নিজেদের কর্মজীবন তৈরী করতে চান তাঁদের কাছে আন্তর্জাতিক বিমানে কাজ করা একটা স্বপ্ন; আর আনর্জাতিক বিমানে কাজ করার অর্থ হলআপনি সেখানে পৃথিবীর সব দেশের যাত্রী পাবেন। এর মানে এই নয় যে আপনাকে প্রতিটি যাত্রীর সম্গে তার মাতৃ ভাষায় কথা বলতে হবে। তবে সম্ভবত আপনি আপনার নিজের এলাকা থেকে বিদেশে একই জায়গায় আসা যাওয়া করবেন, তাই আপনাকে ইংররেজী ও সেই দেশের ভাষা জানতে হবে। যেমন ধরুন, আপনি যদি জার্মান এয়ার লাইন লুফ্থান্সাতে কাজ করেন তাহলে ভারত ও জার্মানের বেশীর ভাগ বিমান যাত্রীদের সঙ্গে কথোপকথন করার জন্যে আপনাকে জার্মান ও ইংরেজী জানতে হবে। বিমান চালক বা ফ্লাইট এটেন্ডেন্ট রূপে প্রতিদিন কাজ করার জন্যে ও নিয়মিত বিদেশে ভ্রমণ করার জন্যে আপনাকে স্থানীয় ভাষা এবং দ্বিতীয় ভাষা জানতে হবে--যাঁদের ভাষার ডিগ্রি আছে ও যাঁরা ঘুরতে ভালোবাসেন তাঁদের জন্যে এটি আদর্শ কাজ।
বিদেশী ভাষার আ্যাড্ কপি রাইটার
আপনি হয়তো আপনার পণ্য ও পরিষেবার আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃতি চান। অথবা আপনি হয়তো কোন এজেন্সির ভাষা এবং সাংস্কৃতিক বিভাগে করেন যেখানে আপনি দ্বিতীয় ভাষায় বিজ্ঞাপন তৈরী করেন। দ্বিতীয় ভাষায় দক্ষতা থাকলে আপনি এই সব কাজ করতে পারেন, বিজ্ঞাপন আরও ভালোভাবে করতে পারেন। যাঁরা রচনাত্মক কাজ করতে চান, তাঁদের সৃষ্টি সম্পর্কে মানুষের প্রতিক্রিয়া ও আবেগ আশা করেন তাঁদের পক্ষে বিজ্ঞাপন জগতে কাজ করা একেবারে সঠিক।
প্রকাশনার জগতে সম্পাদক/লেখক
প্রকাশনার জগতে সাময়িক পত্র-পত্রিকা ও প্রকাশনার ক্ষেত্র এলেও, এতেই তা সীমাবদ্ধ নয়। কার্যত অধিকাংশ কোম্পানী তাদের নিউজ লেটার, প্রেস রিলিজ ও অত্যাবশ্যক বিষয় স্পষ্ট করে পুনরায় লেখার জন্যে এমন কাউকে চায় যিনি সম্পাদকের কাজ করতে পারেন। অধিকন্তু আপনার কল্পনার বাইরেও এমন অনেক কোম্পানী আছে যারা তাদের দৈনন্দিন কাজে দ্বিভাষিক বা বহুভাষিক কর্মচারী চায়। যাঁরা ইংরেজী ও অন্য ভাষায় মক্কেল অথবা ব্যবসার ভাগীদারের কাছে চিঠি লিখতে পারেন বা সম্পাদনার কাজ করতে পারেন। এমনকি এর অর্থ বিভিন্ন ভাষা সম্পাদন ও প্রকাশনার সফটওয়ার হতে পারে। সম্পাদনা ও প্রকাশনা এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে আপনি লিখিত বিষয়কে চূড়ান্ত করেন ও আপনার ভাষার দক্ষতা দেখাতে পারেন।
আতিথেয়তা ও ভ্রমণ শিল্পে ম্যানেজার
আপনার ভাষাগত দক্ষতা থাকলে বসবাস করা, কাজ করা ও সেই দক্ষতা থেকে লাভবান হওয়ার জন্যে নিজের দেশে বা অন্য দেশে হোটেল ম্যানেজমেন্ট একটি আদর্শ পেশা। যদি আপনি দ্বিতীয় ভাষার সাহায্যে হোটেল কর্মচারী ও স্থানীয় মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পারেন তাহলে এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে ও কাজ পাওয়া সব সময় সহজ হবে। তবে আপনার নিজস্ব স্থানীয় ভাষাও দর্শকদের সাহায্য করতে পারে। নিজের দেশে থাকার সময় চেষ্টা করুন এমন হোটেল খুঁজে পেতে চেষ্টা করুন যেখানে নানা ধরণের বিদেশী অতিথি আসেন, বিশেষ করে আপনি যে ভাষা শিখেছেন সেই দেশের লোকহোটেলে কাজ করলে আপনার ভাষাগত দক্ষতার সদ্ব্যবহার হবে, কারণ আপনাকে অনেক দরকারী জিনিষ অতিথিকে বুঝিয়ে দিতে হবে।
ফিল্ড রিসার্চার
মানব অস্তিত্বের সূচনাকাল থেকে, ইংরেজীতে অনেক জ্ঞানই নথীভুক্ত হয়নি, বিশেষ করে অতীতের। উদাহরণস্বরূপ, চৈনিক, আরব ও হিন্দু সভ্যতা যা খুঁজে পেয়েছে বাকী পৃথিবী তার জন্যে অপেক্ষা করছে। কিছু কিছু পুরাতন রচনাবলীর উপর কাজ করার জন্যে যথেষ্ট লোক নেই। এই বিশাল কাজ অল্প কয়েকজন জাতীয় ভূ-বিজ্ঞানীদের হাতে ছেড়ে দিলে চলবে না। অতীত জানার জন্যে যদি আপনি অধীর হন তাহএ আপনার বিদেশী ভাষা জ্ঞানকে কাজে লাগান, তার উপযুক্ত ব্যবহার করুন। মানব মণীষার অগ্রগতিতে তাহলে আপনার অভিনব অবদান থাকবে।
কন্টেন্ট মডারেটার
অনলাইন মিডিয়ার এখন বিরাট জগৎ, এবং প্রতিদিন সারা বিশ্বে লক্ষ লক্ষ মানুষ অনলাইনে তথ্য অনুসন্ধান করছে, পোষ্ট করছে, ও শেয়ার করছে। আপনি জেনে আশ্চর্য হবেন, একদিনে
৫০ কোটি মানুষ টুইট করছে, ফেসবুকে ৪ পেটাবাইট ডাটা তৈরী হচ্ছে, হোয়াটস আপে ৬৫ বিলিয়ন ম্যাসেজ পাঠানো হচ্ছে ও মোটামুটি ২৯৪ বিলিয়ন ই-মেল পাঠানো হচ্ছে। প্রকাণ্ড এই তথ্য, এবং এই তথ্যগুলি তৈরী হয় বিভিন্ন ভাষায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে যিনি তথ্য তৈরী করেন তিনি সংস্থার নিয়মাবলী মেনে চলেন না। এই সব সংস্থাকে তখন একটা নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসতে হয় নিজেদের প্ল্যাটফর্মকে পক্ষপাতমূলক ও অবাঞ্ছিত বিষয়বস্তু থেকে দূরে রাখতে হয়। অন্নলাইনে সবার জন্যে জায়গা সুরক্ষিত রাখতে কন্টেন্ট মডারেটারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার যদি ফ্রেঞ্চ, জার্মান, স্প্যানিশ, আরবী, ডাচ, ইতালিয়ান ইত্যাদি ভাষায় দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি ভারতে বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থায় কাজ করতে পারেন। আপনি যদি আপনার সাথীকে দিয়ে কিছু আয় করতে চান তাহলে ভাষায় অভিজ্ঞদের জন্যে কিছু বিশেষ ধরনের আংশিক সময়ের বা ফ্রী-লেন্সিং কাজ আছে, যেমন, শিক্ষক, পডকাস্টার, ব্যাখ্যাকার, ব্লগার, ট্যুর গাইড ইত্যাদি।
উপসংহার
বিদেশী ভাষা শিক্ষার ভবিষ্যৎ
উজ্জ্বল। প্রতিদিনই নোতুন নোতুন সুযোগ তৈরী হচ্ছে। ব্যবসার ক্ষেত্রে বা আই বি এম, এল এণ্ড টি, জেনপ্যাক্ট, এক্সেঞ্চার ইত্যাদি কোম্পানিগুলি এখন তাদের প্রত্যাশিত কর্মচারীর ভাষাগত দক্ষতা যাচাই করে দেখছে।
আমাদের অতীতের পর্যবেক্ষণ পুনরাবৃত্তি করে বলা যায়, প্রযুক্তিগত উন্নতির কারণেই পৃথিবীটা কাছে এসে গেছে, দ্বিতীয় কোন একটা ভাষা শেখাটা তাই জরুরী। এর ফলে আপনার আত্মসম্মান বাড়বে, পেশার জগতে সফলতা আসবে এবং আপনি আরও অনেক কিছু লাভ করবেন।